সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

একজন বিচারক যিনি সবসময় ন্যায়বিচার করেন

একজন বিচারক যিনি সবসময় ন্যায়বিচার করেন

ঈশ্বরের নিকটবর্তী হোন

একজন বিচারক যিনি সবসময় ন্যায়বিচার করেন

আদিপুস্তক ১৮:২২-৩২

 ন্যায়বিচার। পক্ষপাতহীনতা। আপনি কি এই ধরনের মহৎ গুণগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হন না? মানুষ হিসেবে আমাদের এক সহজাত চাহিদা হচ্ছে, আমরা চাই যেন আমাদের সঙ্গে সবাই ন্যায্য আচরণ করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আজকের জগতে ন্যায়বিচার বলতে গেলে দেখাই যায় না। তবে, একজন বিচারক, যিনি আমাদের নির্ভরতা পাওয়ার যোগ্য, তিনি হলেন যিহোবা ঈশ্বর। তিনি সবসময় ন্যায়বিচার করেন। এই বিষয়টা যিহোবা ও অব্রাহামের মধ্যেকার এক কথোপকথনে স্পষ্ট হয়েছিল, যা আদিপুস্তক ১৮:২২-৩২ পদে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। *

যিহোবা যখন সদোম ও ঘমোরার পরিস্থিতি পরীক্ষা করে দেখার ব্যাপারে তাঁর সিদ্ধান্তের বিষয়ে অব্রাহামকে বলেছিলেন, তখন অব্রাহাম তার ভাইপো লোটসহ সেখানে বসবাসরত ধার্মিক লোকেদের নিরাপত্তার ব্যাপারে আশঙ্কা করেছিলেন। অব্রাহাম যিহোবার কাছে বিনতি করেছিলেন: ‘আপনি কি দুষ্টের সহিত ধার্ম্মিককেও সংহার করিবেন? সেই নগরের মধ্যে যদি পঞ্চাশ জন ধার্ম্মিক পাওয়া যায়, তবে আপনি কি তথাকার পঞ্চাশ জন ধার্ম্মিকের অনুরোধে সেই স্থানের প্রতি দয়া করিবেন না?’ (২৩, ২৪ পদ) ঈশ্বর বলেছিলেন যে, মাত্র ৫০ জন ধার্মিক লোক পাওয়া গেলে তিনি সেই নগরগুলোকে ধ্বংস করবেন না। অব্রাহাম আরও পাঁচ বার যিহোবার কাছে অনুরোধ করেছিলেন, ধীরে ধীরে সেই সংখ্যা কমে দশে নেমে এসেছিল। প্রতি বার, ঈশ্বর বলেছিলেন যে, তত জন ধার্মিক লোক পাওয়া গেলে তিনি সেই নগরগুলোকে ধ্বংস করবেন না।

অব্রাহাম কি ঈশ্বরের সঙ্গে তর্ক করছিলেন? নিশ্চয়ই না! সেইরকম করলে ঔদ্ধত্য দেখানো হতো। অব্রাহামের কণ্ঠস্বরে উপযুক্ত শ্রদ্ধা ও নম্রতা প্রতিফলিত হয়েছিল। তিনি নিজেকে সামান্য ‘ধূলি ও ভস্ম’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। (২৭ পদ) অধিকন্তু, অব্রাহাম যে-প্রশ্ন করেছিলেন, তা যিহোবার ন্যায্যতার ওপর তার এই আস্থা প্রকাশ করেছিল যে, তিনি দুষ্টদের সঙ্গে ধার্মিকদের ধ্বংস করবেন না। তিনি বলেছিলেন: “সমস্ত পৃথিবীর বিচারকর্ত্তা কি ন্যায়বিচার করিবেন না?”—২৫ পদ।

অব্রাহামের কথাগুলো কি সঠিক ছিল? এর উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ ও না। এইরকম মনে করে তিনি ভুল করেছিলেন যে, সদোম ও ঘমোরায় অন্তত দশ জন ধার্মিক লোক রয়েছে। কিন্তু, তিনি যখন বলছিলেন যে, ঈশ্বর কখনোই “দুষ্টের সহিত ধার্ম্মিককেও সংহার করিবেন” না, তখন তিনি নিশ্চয়ই সঠিক কথা বলছিলেন। পরে ঈশ্বর যখন সেই দুষ্ট নগরগুলোকে ধ্বংস করেছিলেন, তখন ধার্মিক লোট ও তার দুই মেয়ে স্বর্গদূতদের সাহায্যে রক্ষা পেয়েছিল।—২ পিতর ২:৭-৯.

এই বিবরণ আমাদেরকে যিহোবা সম্বন্ধে কী শিক্ষা দেয়? সেই নগরগুলোকে পরীক্ষা করে দেখার বিষয়ে তাঁর ইচ্ছার বিষয়টা অব্রাহামকে জ্ঞাত করার দ্বারা যিহোবা আসলে অব্রাহামকে তার অনুভূতি প্রকাশ করতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছিলেন। এরপর, তিনি ধৈর্যপূর্বক তাঁর বন্ধু অব্রাহামের কথা শুনেছিলেন, যখন অব্রাহাম তার চিন্তা প্রকাশ করেছিলেন। (যিশাইয় ৪১:৮) এটা আমাদেরকে কত সুন্দরভাবেই না শিক্ষা দেয় যে, যিহোবা হলেন একজন নম্র ঈশ্বর, যিনি তাঁর পার্থিব দাসদের মর্যাদা দেন ও সম্মান করেন! স্পষ্টতই, আমাদের সেই বিচারক যিহোবার ওপর পূর্ণরূপে নির্ভর করার উত্তম কারণ রয়েছে, যিনি সবসময় ন্যায়বিচার করেন। (w০৯ ১/১)

[পাদটীকা]

^ সেই ঘটনায় একজন স্বর্গদূত যিহোবাকে ব্যক্তিগতভাবে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, যিনি তাঁর হয়ে কথা বলেছিলেন। আরেকটা উদাহরণের জন্য আদিপুস্তক ১৬:৭-১১, ১৩ পদ দেখুন।

[১৪ পৃষ্ঠার চিত্র]

অব্রাহাম সদোম ও ঘমোরা সম্বন্ধে যিহোবার কাছে বিনতি করেছিলেন